Sunday, 30 July 2017

ফাঁকা ট্রেনের রহস্য (দ্বিতীয় পর্ব) (কবি বিশ্বাস) (Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

ফাঁকা ট্রেনের রহস্য (দ্বিতীয় পর্ব)
কবি বিশ্বাস (Ami Kobi Biswas Bolche)
#আমার প্রায় প্রানটা অধেক হয়ে গেছিলো। জয় মা কালী; জয় দূর্গা আরো কত কি আতরেছি ওই দুই মিনিটে; বুকের ধুকপুকানি প্রায় চরম মাত্রায়, এই ফাঁকা ট্রেনে শুধু আমি একই যাত্রী। মনে মনে ভগবানকে ডাকছি কোনো মতে বাড়ি ফিরতে পারলে হয়; আর বাবা এসব না এই শেষ ট্রেনে,মায়ের একমাত্র ছেলে আমি তার পর এখনো বিয়ে করিনি; এত তাড়াতাড়ি মরতে চাইনা আমি। হে প্রভু বাঁচও আমাকে বলতে বলতে হটাৎ ট্রেনের প্রচন্ড জোরে হুইসেল, আচমকা শুনে, সিটের উপর লাফ মেরে উঠে পরি। গলা শুকিয়ে আসছে তেষ্টাও পেয়েছে মারাত্মক। ওদিকে ইয়ে পেয়ে গেছে জোরটার; প্রানটা বেরিয়ে গেলো মাগো। হঠাই ট্রেনটা আবার চলতে শুরু করলো; গলা শুকিয়ে জিভ একেবারে কাঠ হয়ে যাচ্ছে। এখন মনে হচ্ছে কাকিমার কথা শুনে রাতটা বন্ধুর বাড়িতে থেকে গেলে হয়তো ভালো হতো।
# কেমন আজব ট্রেনরে বাবা, কেউ কোথাও নেই, কোনো যাত্রী নেই। হটাৎ করে ক্যারাট আসতেই, চোখের সামনে দেখি রূপবতী মহিলা দাঁড়িয়ে, আমিতো প্রায় ভূত ভূত বলে চেচিয়ে উঠেছিলাম। এতটা হাঁফাতে শুরু করেছি যেন মনে হচ্ছে ১০কিলোমিটার দৌড়ে এসেছি, বাবাগো কে আপনি!(প্রায় হাঁফাতে হাঁফাতে বলছি) মহিলাটাও আঁতকে উঠে বলছে কে মশাই আপনি মেয়েদের মতো চেঁচাচ্ছেন কেন? আমাকে দেখে কি আপনার ভূত বলে মনে হচ্ছে (মহিলাটা প্রায় রেগে গিয়ে),কি মশাই আপনি ব্যাটাছেলে না মেয়েছেলে, এই ভাবে অভদ্র-র মতো চেঁচায় কেউ? না মানে ইয়ে! কি ইয়ে থাবড়ে গাল লাল করে দিবো মস্করা হচ্ছে আমার সাথে। উনিতো জাতা বলে গেলেন। কিন্তু আমিতো জানি ভয়ে আমার পুরো বেরিয়ে যাচ্ছে। যাই আমি কিছু বলছি না শুনে নিজেই চুপ চাপ বসে পড়লেন।

#ইচ্ছা করলেও জল খাবার উপায় নেই। ওদিকে আবার ইয়ে পেয়ে গেছে। কি যে করি তার উপর এই রাগী মহিলা! হে প্রভু বাঁচও আমাকে, পরের স্টেশনে ট্রেন থামতেই আগে গিয়ে একটু হালকা হয়ে নিলাম। তারপর ট্রেনে উঠে জল খেয়ে নিলাম; আহা কি শান্তি যেন এক প্রকার প্রাণ ফিরে এলো। মাগো কি শান্তি। আমার এই নাজে হাল অবস্থা দেখে মেয়েটি আমাকে বলতে লাগলো! ঠিক আছেন আপনি; কি হয়েছে এত ভয় পাচ্ছেন কোনো? আমার গলায় তো কোন সারা নেই, শুধু ইয়ে ইয়ে করে যাচ্ছি। অরে ধুর মশাই খামুনতো তখন থেকে ইয়ে ইয়ে করে যাচ্ছেন কথা বলতে পারেন না নাকি? নাকি ফাঁকা ট্রেনে একটা একলা একটা সুন্দরী মেয়ে দেখে আপনার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে । আরে হয় হয় এমনটা হয় আমি জানি। আমিও মনে মনে বলছি; (ঘন্টা জানেন আপনি, আমার ভয়তে বেরিয়ে যাচ্ছে আর আমি নাকি এখন মেয়ে দেখতে বসবো) না মানে একা ছিলামতো তাই আপনাকে হটাৎ দেখে একটু ইয়ে মানে একটু ভয় পেয়ে গেছিলাম। দেখুন আমার একটা নাম আছে। আমার নাম আছে, আমার নাম উর্মিলা রায়।আপনার নাম কি? আমার নাম হেমন্ত দাসগুপ্ত।
#উর্মিলা :- তা এই রাতে আপনাকে ট্রেনে চাপতে কে বলেছে শুনি?
#হেমন্ত :-বন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলাম অফিস থেকে ফেরার পথে। আর আপনি?
#উর্মিলা :-আমি আমার দিদির বাড়ি এসেছিলাম।
#হেমন্ত :- আসলে এই ফাঁকা ট্রেনে আপনাকে হটাৎ করে দেখে একপ্রকার ভয় পেয়ে গেছিলাম, এমনিতে গ্রাম অঞ্চল এলাকা তার উপর আবার রাতের শেষ ট্রেন। ফাঁকা স্টেশন তার উপর এই ফাঁকা কামরা। আপনাকে হটাৎ দেখে আমার প্রানটা বেরিয়ে গেছিলো প্রায়।
#উর্মিলা :- তা মশাই কোথায় যাবেন আপনি?
#হেমন্ত :-আমি হাওড়া যাবো আর আপনি ?
#উর্মিলা :-আমিও ওই ওই হাওড়া। তা হেমন্ত বাবু আপনার নামটা ভারী বেশ; ওই একটা কবি কবি ব্যাপার আছে কিন্তু ছন্দ ছাড়া (বলে মেয়েটা হাসতে লাগলো)
#হেমন্ত :-আহা আপনার যে হাসি দেখছি থামছে না। তা এত হচ্ছেন কেন?
#উর্মিলা :-না হেসে কি আর থাকা যায়। আপনি একজন পুরুষ মানুষ হয়ে মেয়েদের মতো ভয় পাচ্ছেন আবার বলছেন হাসছেন কোনো। কি আমিও তো অঙ্ক ক্ষণ ধরে একা স্টেশন বসে ছিলাম আমি তো আপনার মতো করছি না, ধান্দা কি আপনার সুন্দরী মেয়ে দেখে কি পটানোর চেষ্টা করছেন। এই আপনার মতো এই ধান্দা বাজ ছেলেদের আমার জানা আছে। যেই দেখেছেন একা সুন্দরী মেয়ে অমনি শুরু হয়ে গেছেন। এই আপনাকে যত দেখছি তত চোর চোর মনে হচ্ছে। এত রাতে ধান্দাটা কি আপনার বলুনতো?
#হেমন্ত :-হায় ভগবান এই ছিল কপালে। শেষ পর্যন্ত চোর লাগছে আমাকে।
#উর্মিলা :-নানা আমি আপনাকে অপমান করার জন্য কিছু বলিনি । মানে মনে হল তাই বলে ফেললাম।
#হেমন্ত :-বা আপনি তো আমাকে জাতা বলছেন । হে বলুন হাতি কাঁদায় পড়লে চামচিকিতেও লাথি মারে। সবই আমার কপাল, সকাল যে কার মুখ দেখে উঠেছিলাম।
#উর্মিলা :-ভূতের স্বপ্ন দেখে উঠেছেন মনে হয়। হয়তো দেখেছেন একটা ভূত; সুন্দরী মেয়ে সেঁজে আপনার সাথে এক ট্রেনে যাত্রা করছে।
#হেমন্ত :-দেখুন আপনি খুব মজা পাচ্ছেন বলুন না আমাকে এত ভয় পেতে দেখে । তার উপর এই সব মন গড়া কথা শোনাচ্ছেন আমাকে ভয় দেখানোর জন্য। আপনি তো ভারী দুস্টু মেয়ে।
#উর্মিলা :-নানা আমিতো দুস্টু ভূত ।
#হেমন্ত :-দেখুন কাজটা আপনি কিন্তু ভালো করছেননা।এক জন অসহায় কে আরো অসহায় করে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন।
#উর্মিলা :-আমি দেখায় কি আপনি ভয় পাবেন? আচ্ছা গলাটা পাল্টে যদি একটু ভূতের মতো করে কথা বলি। তার পর চুলটা ছেড়ে যদি এলোমেলো করে দেই।
#হেমন্ত :-দেখুন খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু?
#উর্মিলা :-খারাপ; কোথায় খারাপ হবার আর কি করলাম। আপনি আমাকে দুস্টু বলেন তাই একটু দুষ্টমি করার চেস্টা করছিলাম আর কি।
#হেমন্ত :-থাক আপনাকে আর দুস্টুমি করতে হবে না। আপনি এবার ভালো মেয়ে হয়ে চুপ চাপ বসুনতো। তা আপনাকে তো সত্যি খুব সুন্দর দেখতে; তা এত কথা বলেন কেন? আচ্ছা আপনার সাথে দেখা হয়েছে কিছু ক্ষণ আগে। আর আপনি আমার সাথে এমন ভাবে কথা বলছেন যেন কত দিন ধরে চেনেন আমাকে।
#উর্মিলা :-আসলে ভাবলাম এই ফাঁকা ট্রেনে একা বসে বোর হবার থেকে আপনার সাথে একটু আড্ডা দেই । কিন্তু আপনি মনে হয় চাইছেন না যে আমি এখানে থাকি! তাহলে এক কাজ করি আমি বরং পাসের কামরায় চলে যাচ্ছি ।
#হেমন্ত :-আরে নানা আমি তা একদমই বলতে চাইনি। আপনি থাকুন এখানে আমি ঠিক আছি। আমার কোনো অসুবিধা নেই।
#উর্মিলা :-অসুবিধা নেই নাকি, একটা সুন্দরী মেয়ে দেখে প্রেমে পরে গেছেন। সোজা কথা ছেলেরা শিকার করে না সেটা আমি জানি। কি হেমন্ত বাবু প্রেমে পড়েছেনতো আমার! হে জানি এখন কি বলবেন, এমন কিছু না। তবে যাই বলুননা কেনো আমি জানি আমি চলে গেলে আপনি আমাকে মিস করবেন সেটা আমি জানি।

এত কথার মাঝে পরের স্টেশনটা এসে গেলে। আমি ভাবতে লাগলাম আর কিছু ক্ষণ তার পৌঁছে যাবো। কিন্তু তখনি হটাৎ এবার কারেন্ট চলে গেলে ট্রেনের। কারেন্ট আসতেই দেখি।
বাকিটা পরে......

No comments:

Post a Comment