Monday, 31 July 2017

হয়তো আবারো (কবি বিশ্বাস)(Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

হয়তো আবারো
কবি বিশ্বাস 
হয়তো আবারো দেখা হবে কোথায়, 
আবার কোনো ভিনদেশে, 
যেখানে রোদ এসে ঝিকিমিকি দেবে তোর পায়ে, 
তখন আমি আলতো করে দেখবো তোর মুখ, 
আবার হয়তো তোর ঠোঁটে 
পাগল এর মতো চুমু খাবো,
আবার হয়তো তোর শরীর এর গন্ধে 
পাগল হয়ে যাবো,কিংবা হয়তো 
তোর বুক মাথা গুজব, 
জানিস আজ মনে পরছে তোকে 

টুকরো চিঠি (কবি বিশ্বাস) (Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

টুকরো চিঠি
কবি বিশ্বাস
মন দিয়ে লেখা কোনো চিঠি
জানিনা, দিয়ে যায় মনে ব্যাথা,
তবুও শুরুটা যে বেশ ভালো ছিল,
কালি ছিল কলমএ,
টেনে ছিলাম যেমন খুশি দাগ ৷
তবু আটকে থাকা ওই বদ্ধ ঘরে
বিছানার এক পশে,
আজ জেগে আছি সেই ভোরে,
তবু জানি আসবেনা কল,
আর এই টেলিফোনে ৷
শেষটা যে দিলে ব্যাথা,
ভাবিনি তবুও এমন হবে,
আজ হয়তো অচেনা লাগে,
তোমার কাছে আমায়,
একলা নিজেকে ৷৷

যদি যাই ভেসে আমাদের স্বপ্ন (কবি বিশ্বাস)(কাল্পনিক কবি)(Ami Kobi Biswas Bolche)


যদি যাই ভেসে আমাদের স্বপ্ন, 
ভুলে যেওনা আর মন এর কষ্ট,
শেষ হয়েও শেষ করতে চাই না তোমার স্মৃতি, 
বানের জলে ভেসে যাই যদি রক্তের শরীর, 

বা অচল পর হয়ে যাই যদি অন্যের প্রদীপ,
মন বোরো চঞ্চল রাতের কবি.........
রাতের বেলা চাঁদ হয়ে ফুটে থাকবো যদি,
দেখবো না আমি মধ্যে রাতে,

অশ্রু ভেসে যাবে পথ চোখের জলে

তুমি কবিতা কবি বিশ্বাস (Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

তুমি কবিতা
কবি বিশ্বাস
যানিনা কে তুমি
তুমি কবিতা
কীভাবে লিখবো তোমায়
আমার যানা নাই
কোনবা শব্দ জুরলে আমি
পাবো তোমার ছন্দ
তাইতো হয়েছি আমি
কঠিনত্ব দন্ধ।
কোনবা শব্দ থাকলে পরে
তোমায় পাওয়া যায়
কোনবা শব্দ জুড়লে
যানি তোমায় খোজা যায়
কত ভেবে পাগল আমি
কেন পাইনা তোমায়
সবাই আমায় কবি বলে
ছন্দ হারা মশাই।
কত ভেবে ভাললাগে না
পাইনা কেন তোমায়
কেন আমার হৃদয়ে থাকো
ধরতে গিয়ে হার মেনে যাই,
যানিনা কোন সুর আছে
তোমার আমার মাঝে
যাহাদিয়ে ছন্দ হয়
অক্ষর গুলো সাজে।
কেন তোমার পরিহাস
আমার এই কলমে
লিখতে গিয়ে শব্দ হয়
ছন্দ আসেনা মনে।
কোথায় তুমি লুকিয়ে আছ
গভীর অন্তরে
কখন দেবে তুমি
আমার কলমে
যানিনা কে তুমি
তুমি কবিতা🤔
যেদিন কবির সাথে কবিতার মিলন হবে,সেদিন কবি কোথাও হারিয়ে যাবে,কোথাও অদৃশ হয়ে যাবো তখন আমায় আর তুমি পাবে না,আমি এমনি বাঁচে থাকবো কবিতার হয়ে,তাই সারাজীবন থাকবো তোমার অপেক্ষায়
কথা দিলাম কবিতা তোমায়।

নারী কবি বিশ্বাস (Ami Kobi Biswas Bolche) (কাল্পনিক কবি)

নারী 
কবি বিশ্বাস
ঘুম বিলাসী দেহের বিছানায়, অচেনা এক নারীর রূপকথা
লাবন্য মধুকাবেরী জানাই তার মনের কথা !
কে বিরহী তুমি? কেন জেগে আছো, রাত্রির সুপ্তসমরহে?
হে নারী কী রহস্য তোমার চোখের পলকে ?
কেন নিদ্রাচ্ছন্ন তুমি ? কী খোঁজো ওই অন্ধকারে ?
ব্যাথাময় অনন্ত রাত্রি জাগরণে,
হে নারী তুমি কার অপেক্ষায় অপেক্ষারত ?
তুমি কার জন্য বসে আছো, কত ব্যাথা বুকে চেপে !
কত রাত জেগেছো তুমি নয়ন জলে সমুদ্র স্রোতে,
তবু আসেনি ঘুম, সুপ্ত ব্যাথা ভরা হৃদয়ে,
রাত কত গভীর এই দেহের বিছানায়
অচেনা কোনো কবির রাত্রি জাগরণে,
অজানা এক নারীর রূপকথা ।।

উপন্যাস (কবি বিশ্বাস) (Ami Kobi Biswas Bolche) (কাল্পনিক কবি)

#উপন্যাস (Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি) 
কবি বিশ্বাস
তোর চাহনি গুলো কেমন যেন!! ওই ভাবে তাকাবিনা, আমার দিকে। আমায় দেখার মতো এমন কীআছে ? আমি এতটাও সুন্দরনা.....
ধুর!! কী যে বলিস; সব সুন্দর্য কী খালি শরীরে থাকে; আমি তোর মন এর সুন্দর্য দেখি রে পাগলী, জানিস মন কী বলে?? যতবার দেখি তোকে, খুব লোভ হয় জানিস তোর ঠোঁট দুটো; কোনো জানিনা! আমাকে কেমন একটা, পাগল করে দেয় ।
যতসব!!! থাক তোকে আর বানিয়ে বানিয়ে বলতে হবে না; বুঝছি আমি, কোনো? আমার ঠোঁট দুটোতে এমন কি আছে শুনি ?? কেন চাস ? মিষ্টি বলে....
কেন চাই সেটাতো জানিনা, শুধু একটা কথা বলা, ঠোঁটে লিপস্টিক পরিসনা প্লিজ; হে মিষ্টিতো বটে, মনে হয় যেন কামড়ে খেয়ে ফেলি ।
সেতো আমি জানি, কত যে আর কিস আর করিস, কামড়ে কামড়েইতো খাস, কিস টাও ঠিক করে করতে পারিসনা;
হ্যা পারি নাতো তাই জন্যই তো ঠোঁটে ঠোঁট রেখে সময়টা কী ভাবে কেটেযাই টের পাওয়ায় যায়না, তবে কী জানিস লোভটা আজ আমার রয়ে গেছে.............
বাকিটা পরে ..............................

উপন্যাস (দ্বিতীয় পর্ব) (কবি বিশ্বাস)(Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

উপন্যাস (দ্বিতীয় পর্ব)
কবি বিশ্বাস(Ami Kobi Biswas Bolche)
রাত কটা বাজে জানিস, ঘুমাবি কখন??
কখন আবার,যখন তুমি বলবে ......
কেন ঘুমাবো ?
অনেক হয়েছে এবার ঘুমা, আমি আর পারছিনা .......
(যত রাত বাড়ে তত বাড়ে ঘুম, আরো বাড়ে উত্তেজনা)
তুই কি আমাকে একটুকু শান্তি দিবি না? আমি ফোনটা রাখলাম ...
আমার খুব ঘুম পাচ্ছে ..
একটা কবিতা সোনাবি, তাহলে ঘুমিয়ে পড়বো,এই কিসের আওয়াজ হচ্ছেরে ??
পাখা, আমি পাখা চালিয়েছি
এত ঠান্ডায় পাখা,পাগল হয়ে গেছিস নাকি? তোর শরীরে ঠান্ডা বলে কিছু নেই,?তোর এত গরম লাগছে ??
এত রাগ তোর আমার উপর, আমি জানি তোর পায়ে ব্যাথা, তুই যে ওই ভাবে পরে যাবি, আমি ভাবতে পারিনি, এই নিয়ে কি আমায় সারা জীবন কথা সোনাবি ??
হে শোনাবো, আমার তোর সামনে ওই ভাবে পরে গেলাম, আর তুই মজা দেখছিলিস, সবাই আমার দিকে তাকিয়ে ছিল তও তুই চুপচাপ বসে ছিলিস,এক বারো তোর মনে হলোনা আমাকে তোলা উচিত ?
হে তুই দায়ী আমি তোর জন্যই পরে গেছি, কোনো যে আবার ফিরে আস্তে গেলাম, চলে গেলেই ভালো হতো.....
আমি কি বলেছিলাম তুই চলে যা, তুই আসার পর থেকেই যাবি যাবি করছিস, তাই আমি বললাম, ঠিক আছে চলে যা...........
হে সব দোষ তো এখন আমার, একবার আটকাতে পারতিস যখন আমি উঠে গেলাম, একবার হাতটা ধরে আমাকে আটকাতে পারতিস, কোনো, আটকাতে যাবি বল, আটকালে তো আমি আর পড়তাম না, আর তুই মজাটা পেটিস কিরে, তাই না, আমি যখন পরে গেলাম তখন তো খুব মজা পেয়েছিস....
তাই মনে হয় তোর, আমি মজা পেয়েছি, এই চিনলি আমাকে
যাই হোক ভালো লাগছেনা আমার এবার ঘুমিয়ে পর, আমাকেও একটু ঘুমাতে দে.....
উপসংহার :- সত্যি যদি জানতাম আমার ওই হাত ছাড়াটা, তুই আমাকে সারা জীবনের জন্য ছেড়ে চলে যাবি, বিশ্বাস কর তাহলে ছাড়তাম না, কোনো দিন আমার জায়গায় একবার নিজেকে বসিয়ে দেখিস, কোনো পারি নি বুজতে পারতিস...
(আচ্ছা একবার ভাবতো সেই দিন যদি তোর জায়গায় আমি ওই ভাবে পরে যেতাম, তুই কি করতিস ?? আঘাত গুলোই দেখলি শুধু, ভালোবাসাটা পায়ের তলায় মাড়িয়ে চলে গেলি,)
স্বপ্নরা জাল বোনে,
তোর মনের আনমনে,
ঘুমায়, চোখের পাতা,
শুধু ইচ্ছেরা জেগে থাকে,
উষ্ণতা শরীরে ছড়ায়,
অন্ধ ঘরের ঝাপসা দেওয়ালে.....
আজ জেগে আছি উষ্ণ মায়াবী গভীর রাতে.,
আজ স্বপ্নরা জাল বোনে ...................

শেষ বার(কবি বিশ্বাস) (Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

শেষ বার
কবি বিশ্বাস 
কেন যে বারেবারে দেখা হয় ,
অকারণ শুধু কথা হয়।
পিছুটান শুধু বাড়ে অকারণ 
মনের গভীরে ফাঁকা শূন্যতায়,
সব খানিক খুনের গল্প মাত্র,
বাকিটা নয় ইতিহাস।
হৃদয় খুলে ছুঁয়ে দেখো ,
লেখনীর বইয়ের পাতায়।
মন্তব্য গুলো নাহয় তোলা থাক,
শেষ বার এর; পরের পাতায়,

সময় তোমায় ছুতে চায়,
পেতে চায় ওই ঠোঁটের পরশ,
আলসেমি তুমি ঘুম কাতরে,
জড়িয়ে ধরে পাসবালিশে।
মনেকে তুমি বৃথাই জানাও
দিনের আলোর অন্ধকারে।
রাগ যে, তোমার মিষ্টি ভারী
দুস্টু হাসি ঠোঁটের কোণে।

তোমার চোখের পাতায় কাজল হব,
লেপ্টে রব আলতো করে,
দুষ্টমিতে ছোঁব তোমায়,
তোমার চোখের ইশারাতে।
ঘুম দেব তোমার চুলের খোপায়,
বধ জীবন করাগারে, 
আবার আমি কবি হবো
রাতের বেলা শেষ বারে,
হয়তো আবার হারিয়ে যাবো
সাদা কালো ওই ঝাপসা পথে,
শেষ বার ওই রাস্তাতে
দেখা দিয়ো সেই দুপুরে।
আনমনে ওই পথের পাসে
দেখা হবে হটাৎ করেই।
শুধু শেষ বারে ইচ্ছে ভারী
চুমু খাবো তোমার ঠোটে।।





Sunday, 30 July 2017

মৃত সমাজ (কবি বিশ্বাস) (Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

মৃত সমাজ 
কবি বিশ্বাস (Ami Kobi Biswas Bolche)
এই মৃত সমাজে আমাকে দিস একটু বাঁচবার আসা, 
একটু পেতে দিস ওই প্রভাতী আলো, 
পচাগলা এই শরীরটাকে একটু ঘুমাতে দিস তোর কোলে, 
জানি, বিছানা ভিজে যাবে আমার রক্তে
তবু মুক্তি যে আমার আঁধার রাতে;
ওগো বিলাসী মোর, একটু ঘুমাতে দিয়ো তোমার কোলে।
নয়ন আজি মোর লুটিয়াছে সেই কবরে
যেথা, শেষ বার দেখা হয়েছিল তোমার সাথে
মনে কি আছে তোমার ? সেই বৃষ্টি ভেজা রাতের কথা-
আমার দেহ ছিল রক্তাক্ত, রং ভরা তোমার ওই ওড়নায়,
জানো বিলাসী ঘুম ছিল আমার চোখে,
সেই যে ঘুমালাম, আর যে দেখা হলো না।
পেলাম না আর শেষ বার, তোমার গায়ের গন্ধ
দেখা হলোনা আর তোমার ঠোঁটের হাঁসি;
জানি তোমার ব্যাথা, নদী হয়ে নেমেছিল তোমার চোখে-
ক্ষুদা যে বড়ো কষ্ট বিলাসী, ঘুমাতে দেয়না আমায় রাতে
কষ্ট যে খুব এই বুকের মাঝে, ক্লান্তি আসে আমার শিরাতে-
নগ্নতাতো আমার শরীরে বৃথাই চাদর দিস ওই কবরে,
এই চোখে আসেনি আর কোনো বিকেল.
শুধু অন্ধকার ঘনিয়েছে চোখের পাতায়।
সমাজ আমায় পাপী বলে ধিকার দেয় কবিতাতে-
নিজের মনে ক্ষুদ্র নগ্নতাকে লুকাস তোরা মৃত সমাজে,
ওগো বিলাসী মোর, একটু ঘুমাতে দিয়ো তোমার কোলে
জানি, বিছানা ভিজে যাবে আমার রক্তে।।


ঊনিশ শতক কবি বিশ্বাস (Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

ঊনিশ শতক 
কবি বিশ্বাস (Ami Kobi Biswas Bolche)
কোনো এক ঊনিশ শতক এর প্রাতঃ সন্ধ্যায় 
বিকেল ঘনিয়ে ছিল নদীর ঘাঁটে -
স্রোতে যেথা শান্ত হল, তোমার চোখের পাতায় 
এলোমেলো চুল গুলো ঢেকে দিয়েছিলো আমার মুখ,
বসন্তের নেশা লেগেছিলো শরীর জুড়ে,
নেশা লেগেছিলো, পলাশ এর পাতায়- পাতায়-
ঘুম ভাঙা পাখির শৌখিনতা আলাদি হয়ে উঠেছিল;
কে জানে এ শতাব্দী মনে রাখবে কিনা আমাদের কথা,
আমার হয়তো পুরানো হয়ে যাব, শতাব্দীর শেষে।
বিহবল শরীরটা হবে একদিন হবে অচল,
চুল দাঁড়ি পেঁকে যাবে সময়ের চক্রে-
সত্যি কি সমাজ মনে রাখবে তোমায়- আমায়-
আমরা একদিন পুরানো হয়ে যাব নতুন সৌখিনতায়,
কুড়ির শতকে সমাজ নাম দেবে আমায় কাল পুরুষ।
থাকবেনা আর যৌবনটা, ঝরে যাবে, বসন্তের পাতার মতো-
তুমি কি? সেই দিনও কবিতা শোনাবে আমায় আগের মতো
কিংবা রবি বা নজরুলের গানের আদল থাকবে তোমার গলায়,
নব্বই বছর বাদে, আবার এই নদীর ঘটে, যদি হয় শেষ দেখা-
তুমি ভুলে কি যাবে আমায় ? ঊনিশ শতক এর এই কবির কথা।
তুমি সেই দিন পুরানো হবে, শুকনো হবে তোমার হাতের ছোয়া,
কুড়ির শতকে থাকবে না আর তোমার মনময়ী রূপ-
যে সৌন্দর্য মিশে যাবে তোমার অহংকারে ।
সৌখিনতার চাদর সরিয়ে আবার দেখো এই ঊনিশ শতকে-
তোমার ওই অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে পাবে আমার কবিতাতে,
কুড়ির শতকে বেঁচে থাকবো, তোমার কবি হয়ে-
শুধু ঊনিশ শতকে এর কবিতা গুলো ভিজিয়ে দেবে,
তোমার চোখের পাতা,ভিজে যাবে, তোমার সারির অচল,
কুড়ির শতকে নাম দেবে তোমায় কলঙ্কিনী।
তবে অসমাপ্ত এই উপন্যাসের নাম দেব "ঊনিশ শতক"
তুমি হবে কলঙ্কিনী আর আমি হব কাল পুরুষ।
তবে জীবন এর শেষ অধ্যায় "ঊনিশ শতক" থেকে যাবে অসমম্ত ,-
অসমম্ত থেকে যাবে, তোমার আমার ভালোবাসা।
আবারো কোন এক কুড়ির শতক এর প্রাতঃ সন্ধ্যায়,
বিকেল ঘনিয়ে আসবে সেই নদীর ঘটে -
স্রোতে যেথা শান্ত হবে, তোমায় দেখবো নতুন রূপে।
তোমার এলোমেলো ছোট চুল গুলোর ফাঁকে,
উঁকি দেবে সন্ধ্যের সাঁজের আলো।
আবারো বসন্ত নামবে তোমার শরীর জুড়ে-
সেই দিন আবারো ঊনিশ শতকের-
এই কবিকে খুঁজে পাবে নতুন সমাজে,
সেই দিন আবারো ঘুম দেব তোমার সারির আঁচলে,
শুধু "ঊনিশ শতক" থেকে যাবে বইয়ের পাতায় ।।



সংলাপ (কবি বিশ্বাস) (Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

সংলাপ
কবি বিশ্বাস (Ami Kobi Biswas Bolche)
তোর চোখের ভাষায় লিখেছিলাম সহস্র কবিতা- 
কেন যে আনমনে তাকাই, তোর দিকে-
কি আছে তোর ওই দুটি চোখে 
ভালোবাসা শুধু নেহাতই অনুসূচনা।
তোর বুকে ডুবিয়েছিলাম নিজেকে,
আমি তোরই চিত্ররূপ, দেখেছিলাম তোর চোখের পাতায়-
শতাব্দীর সৌন্দর্য ভেসে উঠেছিল "তোর" মুখে, 



প্রকৃতির আজব "সংলাপ" তোর চোখের পাতায়।
আমার নগ্নতা মিশে গেছে, তোর কবিতার জালে,
তোর হাতের ছোয়ায়, হারিয়েছি নিজেকে-
তবু কাল্পনিক তোর ঠোঁটের উপর, ভিজিয়েছিলাম সেই দুপুরে,
তোর গন্ধে শরীর ছিল মাতাল,পাগল ছিলাম তোর "সংলাপে"-
তোকে এঁকেছিলাম কবিতার পাতায়,


হয়তবা ভাসিয়েছিলাম চোখের জলে;
হয়তো আবারো, তোকে ভালোবাসবো তোকে গভীর রাতে-
সময়ের টানে ভিজে যাবে বুক, গন্ধ নেবে নেশার বাতাস।
তোর নরম ওই গরম শরীরে, লিখবো শুধু আমার পরিহাস-
তোর চুলের কাটা শেষে, খুঁজি কবিতার পাতায়,
থাকবোনা আর কবি কোনো দিন, শুধু থাকে যাবে আমার সংলাপ।।

অজানা গল্প (কবি বিশ্বাস)(Ami Kobi Biswas Bolche) (কাল্পনিক কবি)

অজানা গল্প 
কবি বিশ্বাস(Ami Kobi Biswas Bolche) 
এ কোন অজানা গল্প, 
বিরহী এক নারীর রূপকথা। 
কাল্পনিক কোনো বদ্ধ কারাগারে, জীবন শুধু অরাজকতা।
ঘুমন্ত কোনো কঠিন বাস্তবে,
আমার তোমার অজানা কবিতা-
অচেনা ওই পথঘাট গুলো,
আঁকাবাঁকা আমার ব্যার্থতা।
আধার রাতে শরীর ঘুমায়
জেগে থাকে আমার নগ্নতা,
ভদ্রলোক শুধু তোদের সমাজ-
আমি নাকি হ জ ব র ল,
ব্যার্থতা যেন শরীর লয় পায়,
ঝলসে যায় আমার চোখের পাতা
অচেনা এই মিথ্যা কথার শহরে,
বেড়ে ওঠে আমার উন্মাদনা ।।

আজও হয়তো (কবি বিশ্বাস)(Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

আজও হয়তো
কবি বিশ্বাস(Ami Kobi Biswas Bolche)
আজও হয়তো একান্তেই বসে আছো,
এলোমেলো ওই চুলের ভাঁজে, ঢেউ খেলেছে ঝড়-
তবু কেন উষ্ণতা পাইনি হাতের শিরাগুলি? 
শুকনো হাতে ধুলা জমেছে বুকের খাদে।
ঘুম আসেনি ধোয়াকালিমাখা চোখগুলি,
হয়তোবা, মৌমাছি ফুলের মধু-
অসাধন করে নিয়েছে কোনো দিবালোকে।
কেন আবার, সে ফুলের কড়ি হয়ে ঝরে যাবে?
তবু আজ খালি পড়ে আছে, গাছের ছায়ায় চেনা মুখগুলি,
সাঁজের আলোয় হয়তো ঝাঁপসা হয়ে গেছে,
অথবা মুছে গেছে তোমার চোখের জলে।
তুমি হয়তো, এখনো দাঁড়িয়ে আছো, কোনো কিনারায়-
হয়তোবা, কোনো অন্য কারোর অপেক্ষায়। সত্যিই কী আছো?
তোমার ভালোবাসা কী ঝরে গেল? বসন্তের পাপড়ির মতো।
প্রকৃতি হয়তো, তোমার মতোই নিষ্পাপ।
তবু অজান্তেই ভাসে গেছে আমাদের ঘরের কুঠি,
শুধু খাটিয়া ছাড়া, বাকি সব কিছু, "অসমম্ত রয়ে গেছে ডাইরির পাতায়"।
"আজও হয়তো", নিঃস্তব্ধ হয়ে আছে কাবলির বটবৃক্ষ।
গাছের ডালের পাখিগুলি হটাৎই উড়ে গেল জানো,
আজ এর কেউ ডাকেনা, খোঁজেনা, পাখিগুলি নেই আজ গাছের ডালে,
মিঠে কথায় কেউ আর ভোলায়না, কোনো একান্ত দুপুরে।
"তুমি আজও হয়তো একান্তেই বসে আছো"।
তোমার নাম কী আজ বিলাসী? ভালোবাসা ফুরায়নি হয়তো,
শুধু ভেসে গেছে কোনো জলের স্রোতে।
তোমার জন্য "আজও হয়তো" বসে আছি কোনো নদীর ঘটে।
ওই ঘোলা জলে ছুঁয়ে দেখো, খুঁজে দেখো;
হয়তো আমায় দেখতে পাবে তোমার হাতের খাঁজে।
আকাশে ঘন মেঘ জমেছে, আবারো আসবে কি সেই কাল বৈশাখী?
দেহ গুলো ভিজবে কত চোখের জলে।
"তবু ঘুম চোখে বিরত নেশা লাগে ঠোঁটের ফাঁকে",
শরীরগুলো হয়তো কেঁপে উঠবে, "মাদকীয়তার" ঝলকানিতে।
"আজও হয়তো একান্তেই বসে আছো",
ট্রেন থামেনি আর একা স্টেশনে,
যদি আবারো এসে দাঁড়াই কোনো একদিন,
উঠবে বলো আমার সাথে,
জানো তোমার হাতের ছোয়াগুলো, আজ আমার হাত ভিজিয়ে দেয়।
নৌকার মাঝি আজ আর নেই,
তাই হয়তো, একই দাঁড়িয়ে আছো নদীর ধারে।
তোমার গায়ের ওই মিঠে গন্ধ, আজ আমার উন্মুক্ত শরীর ভিজে যায়
তোমার খোঁপার কাটায় হয়তো বন্দি ছিল কোনো পরী।
কেন খুলে দিলে, হারিয়ে গেল নদীর স্রোত হয়ে
তোমার ঠোঁট দুটো "আজও হয়তো" শুকিয়ে গেছে
আজ আর ওই নরম ঠোঁটে নেশা লাগেনা
ঝলসে গেছে ওই মরণ আগুনে।
দেহটা পুড়ে গেছে বিভীষিকায়
হারিয়ে গেছে ভালোবাসা শুকনো পাতার মোর,
তবু ফিরে আসেনি সেই মুহূতগুলো
"আজও হয়তো একান্তেই বসে আছো"।
জানিনা কেমন লিখেছি ভালো লাগলে কমেন্ড করিস ..

চিত্রকবি কবি বিশ্বাস(Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

চিত্রকবি
কবি বিশ্বাস(Ami Kobi Biswas Bolche)
এই গল্পের সূচনা নেই কোনো
লেখা গুলো বদ্ধ ঘরে বন্দি।
অলসতায় ঝরে পরে ত্রাস
ক্ষিপ্ত বুকের অনুসূচনায়
ইচ্ছা গুলো কালো মেঘের আড়ালে,
ভাসিয়ে নিতে চায় আমায়।
বাস্তবতা সংকীর্ণ গ্লানি,
মুছে দিতে চায় আমায়
কথা তব কথার স্রোতে,
আটকে রাখে অনুসূচনায়।
গল্পগুলোর মাথা গেছে ছুটে-
ভালোবাসার তাসের ঝরে,
বেঁচে থাকার ইচ্ছাগুলো কম
জীবনটা আজ সময় নদীর কূলে।
ভাসতে চাই নদীর ওপারে
মাঝি আমি নৌকার পথের স্রোতে,
ভেসে যাই সীমান্ত কিনারাতে
ডুবে যাবে নৌকার চিত্রকবি
মিশে যায় নদীর শেষ কূলে।

রাগিনী "কবি বিশ্বাস" (Ami Kobi Biswas Bolche) কাল্পনিক কবি

রাগিনী 
কবি বিশ্বাস 
অনন্ত বিরহী লুকাও কোন মেঘের আড়ালে
অবসরপ্রাপ্ত সন্ধ্যায় ঘন অন্ধকারে,
দিগন্ত সহস্র রজনী জলে উঠে অগ্নির দাবানলে
নিভিয়ে দিতে চায় আধার কালো ছায়ায় ।
শুকনো পাতার কান্না ভরা চোখে,
চাঁদের আলোর উষ্ণ কালো আবরণে
মিশে যায় একোন গভীর রাতের দিকে ।
নিঃসঙ্গ রাত্রি জাগরণে চাপা থাকে চোখের পাতায় -
একটু বিশ্রাম চায় কালির অপলকে,
লেপটে যায় ঘন কালো রাত্রি শেষে ।
যন্ত্রনায় জেগে ওঠে রক্তের দাবানলে
অন্ধকার সরে যায় অগ্নির প্রভাতে ,
রক্তময় লাল আকাশে নিভে যায় সহস্র অগ্নিশিখা,
দেখা দেয় নতুন প্রভাতের আলো,
মায়াময়ী অন্ধকার অগ্নিশিখা মিশে যায়
নীল আলোর আবরণে।।

রহস্যময়ী (কবি বিশ্বাস)(Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

রহস্যময়ী
কবি বিশ্বাস
#উষ্ণতা নেমেছিল তোমার শরীর জুড়ে, আদ্র ঊষ্ণ ওই হাতের ছোয়ায় বাতাসে ও লেগেছিল আগুন।ইচ্ছাগুলো তোমার হাতের পরশ পেয়ে মুদ্ধ হয়েছিল উদাসীনতায়।নতুন করে এই শরীরের লেগেছিল নেশা। বিশ্রাম পাইনি চোখগুলো, জেগে ছিল গভীর রাতে। মুদ্ধ ছিলাম তোমার শরীরের গন্ধে, আর ছিলাম তোমার হাতের ছোঁয়ায়, অজান্তেই লিখেছিলাম কত কবিতা , সত্যি যদি জানতাম তুই চলে যাবি! তোর আদল থাকবেনা আর আমার কবিতায়, তবে হয়তো আগেই ছিঁড়ে ফেলতাম ডাইরির পাতাগুলো।


মুছেদিতাম তোর অভিমান,আর বলতাম হে রহস্যময়ী, তোমার বুকে ঘুম দিতাম রবির সাঁজে। তোর হাতের নগ্ন শিরার আলতো পরশ, আমায় জানিস গায়ে দেয় কাঁটা।তোকে হয়তো সত্যি ভালোবাসতে পারিনি, সত্যি হয়তো ভুল ছিল সময়টা। কবে যে বড়ো হয়ে গেলাম মুছে গেল আমার ছোটবেলা।এখন আর হাতের মাঝে সেই নরম ছোয়া পাইনা। আজও চোখদুটো অজান্তেই ভোরে যায়, চোখের জলে।আমিত্ব মিশে যায় তুমিত্তে, লালসা নিয়ে আসে ঘৃণা।সত্যি এমন হতো কী আমাদের আজ? তোকে হয়তোবা একবার হারাতে দেখতে পারিনা।আজও সবই যে পরিহাস শুধু তোর শূণ্যতা।

মনের আত্মকথা একটি বৃক্ষ (কবি বিশ্বাস) (Ami Kobi Biswas Bolche)(The Mind Innerseeling is a Tree)( kobi biswas) কাল্পনিক কবি

মনের আত্মকথা একটি বৃক্ষ
কবি বিশ্বাস (Ami Kobi Biswas Bolche)
যেখানে শব্দ একটি বাতাস বয়ে নিয়ে যায়
গল্প তথা কল্পনায় বদলে যায়। 
মায়াবিনী মরীচিকা মরুকথা গল্পে,
কল্পনার বেশ ধরে,
শুকনো পাতার কালির দাগ মনকে জাগায়।

যে যেন এক কল্পনা,
নেই কোনো অবচেতন, নেই কোনো আকাঙ্খা
নেই কোনো আঁধার স্বপ্ন,
শুধু আছে ভালোবাসা।
সে শান্ত কেবলি শান্ত,
সজীব প্রান্তে আলোসাজানো মনের জানালা।
কণ্ঠধ্বনি চিরশিখা হয়ে মনে আঁকা তাঁর চোখে আমি দেখি স্বপ্ন, তাঁর হাসি ভুলতে সবকিছু । ভুল হয়ে যাই কাজের কল্পনায়, তখন মন হয় ব্যাকুল।
কিছু জমা কথা,মনের কষ্ট গভীর হয়ে মনকে ব্যাকুল করে,
জাগরণে ভেসে ওঠে কল্পনার চাবিকাঠি অবসর জীবন শুধু,ছড়িয়ে থাকে ভালোবাসা ।।

কৃষ্ণকলি (কবি বিশ্বাস) (Ami Kobi Biswas Bolche)

কৃষ্ণকলি
কবি বিশ্বাস
হে ভ্রমর তথা রহিব তপোবনে
বিরহী মনের ধুসর মায়াজালে।
কৃষ্ণ কহিল তব রাঁধারও দাসী,
এ মম শরীর তব কৃষ্ণ বিলাসী
কি জানি, নাম তোমার কথাকলি?
লয় পায় সময় তব, অচির ঘোরগুলি।
মাধবীর মধুময় তোমার পরশ সখী
তোমার লাজুকতায় মুদ্ধ আমি।
ময়ুর পক্ষ যার মস্তকে বিরাজে ,
তাহার দাসী আমি মুক্ত করবী।
নাম কহিতে পায় শব্দ, লয় পায় রাশ-
আমিও অভাগী যেন তোমার দাস।
সময় বয়ে চলে বিরল বিলাস
কোহিবার কথা তব, কি জানি আমি!
হে প্রিয়মোর, আমি তোমার কৃষ্ণকথাকলি।

ফাঁকা ট্রেনের রহস্য (কবি বিশ্বাস)(Ami Kobi Biswas Bolche)(কাল্পনিক কবি)

ফাঁকা ট্রেনের রহস্য
কবি বিশ্বাস (Ami Kobi Biswas Bolche)
#রাত তখন প্রায় দশটা, ভাবলাম আজ শেষ ট্রেনে বাড়ি ফিরবো; সকাল থেকে অফিস এর অনেক চাপ সামলাতে হয়েছে। তাই বিকালটা থেকে গেলাম বন্ধুর বাড়িতে, তবে বেশ, সুন্দর প্রকৃতি এখনকার । দেখে এক প্রকার মুগ্ধ আমি। তার পর দুপুর এর খাওয়া দাওয়া বেশ ছিল। খাবার পর বন্ধু সাথে সাইকেলটা নিয়ে ছুটলাম নদীর পারে, আহা হা হা; কি সুন্দর দৃশ্য, অবাঞ্চিত এই চোখ দুটো আজ যেন স্বর্গ দেখছে। এক অজানা হওয়া যেন পাগল হয়ে যাচ্ছি প্রতি ক্ষনে ক্ষনে, হেমন্ত ঋতুর দক্ষিনা বাতাস আর নদীর জলের গন্ধ যেন নেশা লাগিয়ে দিয়েছে আমার সারা শরীরে।







#কখন যে সাঁঝ নেমে আসছিলো জানিনা, প্রকৃতির মদকীয়তায় দুইবন্ধু কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম জানিনা। ঘুম ভাঙতেই দেখি বন্ধু হা করে চেয়ে রয়েছে। কি জানি কি দেখছে ওই অন্ধকারে, আমার হটাৎ করেই চোখ গেলো ওপারে, দেখি এক নারী নদীতে স্নান করেছে, আমিও এই নিয়ে বন্ধুর সাঁথে ঠাট্টা তামাশা করছি। কিন্তূ হটাৎ করেই চোখ সরাতে মেয়েটা কোথায় যেন উধাও হয়ে গেলো। এইতো ছিল হটাৎ করে উধাও; বিষয়টা একবারেই ধাতস্থ হতে পারলাম না।ওদিকে রাত বাড়ছে বাড়ি ফিরতে হবে তাই বিষয়টাকে ওই খানেই ধামাচাঁপা দিয়ে ফিরে আস্তে হল।


#বন্ধুর বাড়ি যেতেই, কাকিমা বলে উঠলেন, আজ বাবা তোমার বাড়ি যেতে হবেনা, আজ বরঞ্চ এখানেই থেকে যাও তোমার বন্ধু প্রভাত এর সাথে, যা কথা প্রসঙ্গ বলা হয়নি আমার বন্ধুটির নাম প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। এবং আমার নাম হেমন্ত দাসগুপ্ত। সরকারি কর্মচারী আমি, মাঝে সাঝে লেখালেখিও করে থাকি মাঝে মাঝে।

#খুব কষ্ট করে কাকিমাকে বোঝাতে হল বাড়ি আজ ফিরতে হবে তাই বেশি কথা না বলে বেড়িয়ে পড়লাম স্টেশন এর দিকে। গ্রামগঞ্জ এলাকা তাই বন্ধু এগিয়ে দিয়ে গেলো স্টেশন অবধি, তারপর স্টেশনে পা রাখতেই দেখি গা ছমছমছে একলা স্টেশন। কেউ নেই কথা শুধু আমি একা, অপেক্ষায় শুধু এই লাইনের শেষ ট্রেন।


#কেমন যেন দমবন্ধ করা পরিবেশ চারিদিকে, যাই হোক ট্রেন আস্তে যেকোনো মিনিটঃ পাঁচেক; এক প্রকার ভয় দানা বাঁধছিলো মনের কোন! বেশি কিছু না ভেবে চুপটি করে বসে রইলাম। কেমন যেন সব অচেনা লাগতে লাগলো আমার কাছে, তবে ট্রেন এর হুইসেল শুনে মন একটু শান্ত হল যাক বাবা এবার আর কোনো চিন্তা নেই। ট্রেনে উঠেই সোজা বাড়ি!

#খুব আনমনা ভাবেই ট্রেন থামতেই তরিজরি করে উঠে পড়লাম। উঠতেই চোখ আরো ধাঁধিয়ে গেলো, কি ঘটছিল আমার সাথে কিছু বুজতে পারছিলাম না, পুরো ট্রেনের কামরাটা ফাঁকা কেউ নেই, আমি পুরো হতো ভম্ভো হয়ে বসে পড়লাম সিটে। বুজতে পারছি গায়ের লোমগুলো কেমন যেন খাড়া হয়ে যাচ্ছে। আর মরা কপাল ভাবনা চিন্তা গুলো এমন; তখনি ওই নদীর ঘাটের ওই মেয়েটার কথা; বেশি করে মনে পড়তে লাগলো। কি করে উধাও হয়ে গেলো মেয়েটা। তাঁর মধ্যে ট্রেনটা হটাৎ পরেরস্টেশন আসতেই!সমস্ত ট্রেনের আলোগুলো নিভে গেলো......
#আমার প্রায় প্রানটা অধেক হয়ে গেছিলো। জয় মা কালী; জয় দূর্গা আরো কত কি আতরেছি ওই দুই মিনিটে; বুকের ধুকপুকানি প্রায় চরম মাত্রায়, এই ফাঁকা ট্রেনে শুধু আমি একই যাত্রী। মনে মনে ভগবানকে ডাকছি কোনো মতে বাড়ি ফিরতে পারলে হয়; আর বাবা এসব না এই শেষ ট্রেনে,মায়ের একমাত্র ছেলে আমি তার পর এখনো বিয়ে করিনি; এত তাড়াতাড়ি মরতে চাইনা আমি। হে প্রভু বাঁচও আমাকে বলতে বলতে হটাৎ ট্রেনের প্রচন্ড জোরে হুইসেল, আচমকা শুনে, সিটের উপর লাফ মেরে উঠে পরি। গলা শুকিয়ে আসছে তেষ্টাও পেয়েছে মারাত্মক। ওদিকে ইয়ে পেয়ে গেছে জোরটার; প্রানটা বেরিয়ে গেলো মাগো। হঠাই ট্রেনটা আবার চলতে শুরু করলো; গলা শুকিয়ে জিভ একেবারে কাঠ হয়ে যাচ্ছে। এখন মনে হচ্ছে কাকিমার কথা শুনে রাতটা বন্ধুর বাড়িতে থেকে গেলে হয়তো ভালো হতো।
# কেমন আজব ট্রেনরে বাবা, কেউ কোথাও নেই, কোনো যাত্রী নেই। হটাৎ করে ক্যারাট আসতেই, চোখের সামনে দেখি রূপবতী মহিলা দাঁড়িয়ে, আমিতো প্রায় ভূত ভূত বলে চেচিয়ে উঠেছিলাম। এতটা হাঁফাতে শুরু করেছি যেন মনে হচ্ছে ১০কিলোমিটার দৌড়ে এসেছি, বাবাগো কে আপনি!(প্রায় হাঁফাতে হাঁফাতে বলছি) মহিলাটাও আঁতকে উঠে বলছে কে মশাই আপনি মেয়েদের মতো চেঁচাচ্ছেন কেন? আমাকে দেখে কি আপনার ভূত বলে মনে হচ্ছে (মহিলাটা প্রায় রেগে গিয়ে),কি মশাই আপনি ব্যাটাছেলে না মেয়েছেলে, এই ভাবে অভদ্র-র মতো চেঁচায় কেউ? না মানে ইয়ে! কি ইয়ে থাবড়ে গাল লাল করে দিবো মস্করা হচ্ছে আমার সাথে। উনিতো জাতা বলে গেলেন। কিন্তু আমিতো জানি ভয়ে আমার পুরো বেরিয়ে যাচ্ছে। যাই আমি কিছু বলছি না শুনে নিজেই চুপ চাপ বসে পড়লেন।

#ইচ্ছা করলেও জল খাবার উপায় নেই। ওদিকে আবার ইয়ে পেয়ে গেছে। কি যে করি তার উপর এই রাগী মহিলা! হে প্রভু বাঁচও আমাকে, পরের স্টেশনে ট্রেন থামতেই আগে গিয়ে একটু হালকা হয়ে নিলাম। তারপর ট্রেনে উঠে জল খেয়ে নিলাম; আহা কি শান্তি যেন এক প্রকার প্রাণ ফিরে এলো। মাগো কি শান্তি। আমার এই নাজে হাল অবস্থা দেখে মেয়েটি আমাকে বলতে লাগলো! ঠিক আছেন আপনি; কি হয়েছে এত ভয় পাচ্ছেন কোনো? আমার গলায় তো কোন সারা নেই, শুধু ইয়ে ইয়ে করে যাচ্ছি। অরে ধুর মশাই খামুনতো তখন থেকে ইয়ে ইয়ে করে যাচ্ছেন কথা বলতে পারেন না নাকি? নাকি ফাঁকা ট্রেনে একটা একলা একটা সুন্দরী মেয়ে দেখে আপনার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে । আরে হয় হয় এমনটা হয় আমি জানি। আমিও মনে মনে বলছি; (ঘন্টা জানেন আপনি, আমার ভয়তে বেরিয়ে যাচ্ছে আর আমি নাকি এখন মেয়ে দেখতে বসবো) না মানে একা ছিলামতো তাই আপনাকে হটাৎ দেখে একটু ইয়ে মানে একটু ভয় পেয়ে গেছিলাম। দেখুন আমার একটা নাম আছে। আমার নাম আছে, আমার নাম উর্মিলা রায়।আপনার নাম কি? আমার নাম হেমন্ত দাসগুপ্ত।
#উর্মিলা :- তা এই রাতে আপনাকে ট্রেনে চাপতে কে বলেছে শুনি?
#হেমন্ত :-বন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলাম অফিস থেকে ফেরার পথে। আর আপনি?
#উর্মিলা :-আমি আমার দিদির বাড়ি এসেছিলাম।
#হেমন্ত :- আসলে এই ফাঁকা ট্রেনে আপনাকে হটাৎ করে দেখে একপ্রকার ভয় পেয়ে গেছিলাম, এমনিতে গ্রাম অঞ্চল এলাকা তার উপর আবার রাতের শেষ ট্রেন। ফাঁকা স্টেশন তার উপর এই ফাঁকা কামরা। আপনাকে হটাৎ দেখে আমার প্রানটা বেরিয়ে গেছিলো প্রায়।
#উর্মিলা :- তা মশাই কোথায় যাবেন আপনি?
#হেমন্ত :-আমি হাওড়া যাবো আর আপনি ?
#উর্মিলা :-আমিও ওই ওই হাওড়া। তা হেমন্ত বাবু আপনার নামটা ভারী বেশ; ওই একটা কবি কবি ব্যাপার আছে কিন্তু ছন্দ ছাড়া (বলে মেয়েটা হাসতে লাগলো)
#হেমন্ত :-আহা আপনার যে হাসি দেখছি থামছে না। তা এত হচ্ছেন কেন?
#উর্মিলা :-না হেসে কি আর থাকা যায়। আপনি একজন পুরুষ মানুষ হয়ে মেয়েদের মতো ভয় পাচ্ছেন আবার বলছেন হাসছেন কোনো। কি আমিও তো অঙ্ক ক্ষণ ধরে একা স্টেশন বসে ছিলাম আমি তো আপনার মতো করছি না, ধান্দা কি আপনার সুন্দরী মেয়ে দেখে কি পটানোর চেষ্টা করছেন। এই আপনার মতো এই ধান্দা বাজ ছেলেদের আমার জানা আছে। যেই দেখেছেন একা সুন্দরী মেয়ে অমনি শুরু হয়ে গেছেন। এই আপনাকে যত দেখছি তত চোর চোর মনে হচ্ছে। এত রাতে ধান্দাটা কি আপনার বলুনতো?
#হেমন্ত :-হায় ভগবান এই ছিল কপালে। শেষ পর্যন্ত চোর লাগছে আমাকে।
#উর্মিলা :-নানা আমি আপনাকে অপমান করার জন্য কিছু বলিনি । মানে মনে হল তাই বলে ফেললাম।
#হেমন্ত :-বা আপনি তো আমাকে জাতা বলছেন । হে বলুন হাতি কাঁদায় পড়লে চামচিকিতেও লাথি মারে। সবই আমার কপাল, সকাল যে কার মুখ দেখে উঠেছিলাম।
#উর্মিলা :-ভূতের স্বপ্ন দেখে উঠেছেন মনে হয়। হয়তো দেখেছেন একটা ভূত; সুন্দরী মেয়ে সেঁজে আপনার সাথে এক ট্রেনে যাত্রা করছে।
#হেমন্ত :-দেখুন আপনি খুব মজা পাচ্ছেন বলুন না আমাকে এত ভয় পেতে দেখে । তার উপর এই সব মন গড়া কথা শোনাচ্ছেন আমাকে ভয় দেখানোর জন্য। আপনি তো ভারী দুস্টু মেয়ে।
#উর্মিলা :-নানা আমিতো দুস্টু ভূত ।
#হেমন্ত :-দেখুন কাজটা আপনি কিন্তু ভালো করছেননা।এক জন অসহায় কে আরো অসহায় করে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন।
#উর্মিলা :-আমি দেখায় কি আপনি ভয় পাবেন? আচ্ছা গলাটা পাল্টে যদি একটু ভূতের মতো করে কথা বলি। তার পর চুলটা ছেড়ে যদি এলোমেলো করে দেই।
#হেমন্ত :-দেখুন খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু?
#উর্মিলা :-খারাপ; কোথায় খারাপ হবার আর কি করলাম। আপনি আমাকে দুস্টু বলেন তাই একটু দুষ্টমি করার চেস্টা করছিলাম আর কি।
#হেমন্ত :-থাক আপনাকে আর দুস্টুমি করতে হবে না। আপনি এবার ভালো মেয়ে হয়ে চুপ চাপ বসুনতো। তা আপনাকে তো সত্যি খুব সুন্দর দেখতে; তা এত কথা বলেন কেন? আচ্ছা আপনার সাথে দেখা হয়েছে কিছু ক্ষণ আগে। আর আপনি আমার সাথে এমন ভাবে কথা বলছেন যেন কত দিন ধরে চেনেন আমাকে।
#উর্মিলা :-আসলে ভাবলাম এই ফাঁকা ট্রেনে একা বসে বোর হবার থেকে আপনার সাথে একটু আড্ডা দেই । কিন্তু আপনি মনে হয় চাইছেন না যে আমি এখানে থাকি! তাহলে এক কাজ করি আমি বরং পাসের কামরায় চলে যাচ্ছি ।
#হেমন্ত :-আরে নানা আমি তা একদমই বলতে চাইনি। আপনি থাকুন এখানে আমি ঠিক আছি। আমার কোনো অসুবিধা নেই।
#উর্মিলা :-অসুবিধা নেই নাকি, একটা সুন্দরী মেয়ে দেখে প্রেমে পরে গেছেন। সোজা কথা ছেলেরা শিকার করে না সেটা আমি জানি। কি হেমন্ত বাবু প্রেমে পড়েছেনতো আমার! হে জানি এখন কি বলবেন, এমন কিছু না। তবে যাই বলুননা কেনো আমি জানি আমি চলে গেলে আপনি আমাকে মিস করবেন সেটা আমি জানি।

এত কথার মাঝে পরের স্টেশনটা এসে গেলে। আমি ভাবতে লাগলাম আর কিছু ক্ষণ তার পৌঁছে যাবো। কিন্তু তখনি হটাৎ এবার কারেন্ট চলে গেলে ট্রেনের। কারেন্ট আসতেই দেখি।
#কারেন্ট আসতেই দেখি মেয়েটা উধাও।কোথাও, নেই এইতো ছিল সামনে কোথায় যে উধাও হয়ে গেলো। এবার সত্যি সত্যি ভয়ে হাতপা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।কোথায় গেলো মেয়েটা। উর্মিলা আপনি কোথায় চলে গেলেন। আমাকে কি আবার ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছন বুঝি। দেখুন অনেক হয়েছে এই ছেলে মানুষই কোথায় আছেন দয়া করে বাইয়ে আসুন। আমি আপনাকে আর কিছু বলবো না। এবার দয়া করে বেরিয়ে আসুন। উর্মিলা, উর্মিলা আপনি কোথায় গেলেন(কাঁপতে কাঁপতে ভাবতে লাগলাম) তার হটাৎ-ই, ট্রেনটা খুব জোরে চলা সুর হলো। গম গম কি প্রচন্ড শব্দ যেন মনে হচ্ছে। চারিদিক ফেটে অন্ধকার আমাকে গ্রাস করতে আসছে।অনেক ক্ষণ হয়ে গেলো ট্রেনটা চলছে তো চলছে আর কোনো স্টেশন-ই আসছেনা, ভয় যেন আরো বেশি করে বেড়ে যাচ্ছে। তার পর হটাৎই শুনতে পেলাম একটা মেয়ের গলা! কে যেন একটা গান করছে, কিন্তু কোথাও তো কেউ নেই; ক্রমশ আওয়াজটা যেন আমার খুব কাছে আসছে; হটাৎ করে ঘাড়ের কাছে একটা গম্ভীর আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি , গলা আবারো শুকিয়ে আসছে, বরে বরে শুনতে পাচ্ছি বাঁচও, বাঁচও ,বাঁচও আমাকে, খুব ভারী গলায় কেউ যেন বলছে আমাকে বাঁচও। আমার সাহস কিছুতেই হচ্ছেনা পেছন ফিরে তাকাতে, সবার মুখে শুনছি ভুতের নাম নিলে পেছন ফিরে তাকাতে নেই। বুকের ভেতরটা যেন কেমন একটা করছে, তবে চোখ বন্ধকরে পেছন ফিরে তাকালাম একবার, চোখ খুলতেই দেখি, উর্মিলা আমার সামনে দাঁড়িয়ে।
#হেমন্ত :-কোথায় ছিলেন আপনি, আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছিলেন তাই না। কেন আপনি এমন করছেন?
#উর্মিলা:-আমার হাঁপানো মুখটা দেখে আমাকে বলতে লাগলো কি হয়েছে আপনার আপনি আবার ভয় পেলেন নাকি। আপনার সামনে আমি মাথাঘুরে পরে গেলাম আর আপনি নাকি, আমাকে দেখতে পাচ্ছেন না, আপনার চোখ দুটো কি গেলো নাকি মশাই। আমার মনে হয় আপনার মাথার কোনো প্রবলেম আছে। আপনি একেবারেই স্বাভাবিক ব্যবহার করছেন না। তবে এই ট্রেনে কিছুতো একটা আছে; মাথাটা আমার এমন ভাবে ঘুরে গেলো; আর নিচে পরে গেলাম আমি। আর আপনিও আমাকে দেখতে পেলেন না। তাছাড়া এতগুলো স্টেশন চলে গেলো কেউ উঠলো না। কোই দিদিতো আমাকে এমন কিছুই বলেনি। সেতো বললো ভালোই, ভিড় হয় এই শেষ ট্রেনে; তবে এই ট্রেন ফাঁকা কোনো? কিছুতো একটা রহস্য আছে! এই পুরো গোটা ট্রেনে আপনি আর আমি শুধুই একা! এটা তো হতে পারে না! আর ট্রেনটাই বা থামছেনা কেন? আপনি সত্যি করে বলুনতো আপনি কে? আর এটা কোন ট্রেন?
#হেমন্ত :-দেখুন আমি হেমন্ত দাসগুপ্ত, আপনার কোথাও একটা ভুল হচ্ছে; আমিও আপনার মতো এই সকল প্রশ্নের কোনো উত্তর পাচ্ছিনা! আমার বিষয়টা সব কেমন যেন একটা গুলিয়ে যাচ্ছে।পাগল হয়ে যাচ্ছি আমি, সেই তখন সাঁজের বেলা একটা মেয়ে হটাৎ করেই উধাও হয়ে গেলো। স্টেশন পৌছালাম, স্টেশন পুরো ফাঁকা কেউ নেই; তার পর হটাৎ করেই এই ফাঁকা রহস্যময় ট্রেন! তার উপর আপনার মতো একটা এত সুন্দরী নারী,তও আবার আমার সাথে এই ট্রেন যাত্রার, সঙ্গী! সব কেমন যেন একটা ধোঁয়াশা লাগছে। কি যে হচ্ছে কিছুই বুজতে পারছি না ।
#উর্মিলা:-তবে আর ভয় পেলে চলবে না। এই ফাঁকা ট্রেনের রহস্য আমাদের কেই বার করতে হবে। তবে কিছু যেন একটা মিস করছি আমরা, ভাবুন হেমন্ত বাবু ভাবুন! এ আমাদের কোনো কল্পনা নয়তো। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে এই রহস্যময় ফাঁকা ট্রেন আমাদের?
#হটাৎ করেই মেঘ খুব গর্জে উঠলো, ট্রেনটাও থেমে গেলো আবারো কোনো ফাঁকা স্টেশনে। বুজলাম আবারো যদি অন্ধকার হয় তাই আগেই উর্মিলার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলাম। তার পর যা ভাবলাম তাই; আবার অন্ধকার হয়ে গেলো। তার পর হটাৎ করেই আলো, আলো আসতেই দেখি ট্রেন থেমে আছে এর যাচ্ছে না। আমরা দুজন নেমে পড়লাম ট্রেন থেকে। তার পর যা ঘটলো তা যেন বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। চোখের পলক ফেলতে ট্রেনটা হটাই উধাও হয়ে গেলো। চোখ যেন পুরো ধাঁধা। দেখি আমার আবার সেই স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু এখন এর স্টেশনে এর ফাঁকা নেই সব লোক আছে চারিদিকে। এক ভদ্রলোক জিজ্ঞাসা করলাম এখন কোন ট্রেন আসবে; লোকটি হেসে হেসে উত্তর দিলো, কেন ১০টার শেষ ট্রেন আসবে এখন। কিছুই বুজতে পারছিলাম না। আমি উর্মিলার চোখের দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলাম। এই কি সত্যি নাকি স্বপ্ন দেখছি, কোথায় গেলে ওই আদ্দি কালের মতো দেখতে ওই ট্রেনটা। আর যদিওবা ট্রেনটা মিথ্যা হয়, তবে উর্মিলা আমার পশে দাঁড়িয়ে আছে কি করে? রহস্য যেন ক্রমশ বেড়ে চলেছে। ট্রেনটা গেলে কোথায়? তখনি হটাৎ দেখতে পেলাম বন্ধু প্রভাতকে।

#প্রভাত:- কি হেমন্ত ব্যাগটা যে বাড়ি ফেলে এসেছিলাম আমার, মনটা থাকে কোথায় তোর? আর হা করে কি দেখছিস আমার দিকে? আবার ভূত দেখলি নাকি ? কিরে কিছু বল? জানিস তুই ৯টা নাগাদ স্টেশনে এসেছিসরহস্য যেন ক্রমশ বেড়ে চলেছে। ট্রেনটা গেলে কোথায়? তখনি হটাৎ দেখতে পেলাম বন্ধু প্রভাতকে। আমার বাড়ির ঘড়ি তা এক ঘন্টা ফাস্ট ছিল আমি আজ সকালে সময় মেলাতে গিয়ে ১ঘন্টা বাড়িয়ে ফেলেছিলাম ভুল করে তুইও বা একঘন্টা ধরে কি করছিলিস এখানে?
#হেমন্ত :-আমার যে কিছুই মাথায় ঢুকছেনা প্রভাত! আমায় বেঁচে আছিনা মরে গেছি আমি কিছু বুজতে পারছি না!
#তারপর সবকিছু খোলাসা করে বললাম প্রভাতকে, প্রভাত শুনে প্রায় হতভম্বো হয়ে গেলে। আমার কথা শুনে প্রভাত যা বললো তাতে নিজে যেন কেমন একটা পাগল পাগল মনে হয়ে লাগলো !
#প্রভাত:- প্রথমত হেমন্ত তোর সাথে এই খানে; শুধু আমি দাঁড়িয়ে আছি। কোথায় উর্মিলা কি অবলতাৰ বলছিস? কোথায় উর্মিলা আমিতো কোনো উর্মিলাকে দেখতে পারছিনা। আমার মতে হেমন্ত তোর শরীর ভালো নেই, চল তোকে আমি বাড়ি দিয়ে আসি।
#তারপর আমি আর কিছুই বলতে পারলাম না। আমার গলার স্বর যেন কোথাও হারিয়ে গেছে, শুধু শুনে যাচ্ছি প্রভাত এর কথা, কোনো উত্তর নেই আমার মুখে। আরো বিস্মৃত হলাম যখন দেখলাম উর্মিলা আমার চোখের সামনে হারিয়ে গেলো। মিলে গেল অন্ধকারে; আমি সত্যি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। ট্রেনটা চলে আসলো স্টেশনে; আমিও বন্ধুর সাথে উঠে পড়লাম ট্রেনে। সারা রাস্তা এর কিছুই বলতে পারলাম না। শুধু নির্বাক উপপাদ্য হয়ে থাকে গেলাম। বারবার উর্মিলাকে মনে পড়তে থাকলো, হয়তো ভালোবেসে ফেলেছিলাম উর্মিলাকে । এখন সব ঠিক আছে শুধু ঠিক নেই আমার মনটা। এ এখন অদ্ভুতপূর্ণ সময় আমার জীবন হতে বয়ে চলেছে। বারবার মনে হতে থাকলো কোথায় গেল ওই ফাঁকা ট্রেনটা এর কোথায় বা হারিয়ে গেল উর্মিলা। খুব যে মনে পড়ছে তাকে ; বারবার মনে হচ্ছে ভয়টাই হয়তো ভালো ছিল। কেনো নেমে পড়লাম ট্রেন থেকে, কেনই বা ছেড়ে দিলাম উর্মিলার হাত। খুব কষ্ট হচ্ছে বুকের মধ্যে।
#আমার বন্ধুর মুখে উর্মিলার নাম এর ফাঁকা ট্রেনের রহস্য শুনে এক ভদ্রলোক বলে উঠলেন । আমি হয়তো বুজতে পেরেছি আপনার বন্ধুর কি হয়েছে। আজ থেকে অনেক বছর আগে এই লাইন এই শেষ ট্রেনে ধর্মঘটের দিন একটা মেয়ে তার দিদির বাড়ি থেকে তার বাড়ি ফিরছিলো হাওড়া যাবে বলে। সে দিন ট্রেনটা হাওড়া পৌঁছেছিল ঠিকই কিন্তু ওই ফলে কামরায় ছিল উর্মিলার লাশ। সেই থাকে এই ফাঁকা ট্রেনটা শুনেছি অনেকেই দেখছে । কিন্তু ট্রেনটা যে কোথায় উধাও হয়ে যায় সেটা কেউ জানে না।
#সত্যি হতো কেউ জানেনা ফাঁকা ট্রেনের রহস্য, শুধু জানলাম আমি। ঘটনার শেষ অধ্যায়ঃ এসে কিনা আমি একটি ভূতের প্রেমে পড়লাম। সত্যি হয়তো উর্মিলা ঠিক বলেছিলো! আমি একটা ভীতু কিন্তু আজ থেকে এর কোনো ভয় আমাকে ছুতে পারবে না। কারণ আজ থেকে আমি আর ভয় পাবো না। কারণ যে যায় বলুক আমি জানি উর্মিলা থাকবে আমার সাথে। ওই মেয়েটা অনেকে একটা জিনিস শিখিয়ে গেল যে, জীবনের যেখান পর্যায় যখন তুমি একা; সত্যি হয়তো তোমার পাশে কেউ নেই, তখন সত্যি একটা হাত আছে যা তোমাকে বাঁচার নতুন করে স্বপ্ন দেখায়। শুধু খুঁজে নিতে হয় সেই হাতটা। আমি ভয় ততক্ষনই পেয়েছি যতক্ষণ আমি নিজেকে একা মনে করছিলাম। কিন্তু যখন নিজেকে শক্ত করলাম আর চেপে ধরলাম উর্মিলার হাত তখন আমার সব ভয় চলে গেল। আমি সত্যি আজ একা নোই। আমার জানি আজ আমার কোনো ভয় নেই। চলে এলো হাওড়া স্টেশনে। প্রভাতকে নিয়ে চললাম আমার বাড়ি। খুব হালকা লাগছিলো মনটাকে। আবারো কাল অফিস যেতে হবে।
-সমাপ্ত -
জানি গল্পটা শেষ করতে অনেক সময় নিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু তার জন্য আমি দুঃখিত।পারলে শ্রোতারা আমার ভুল ত্রটি মার্জনা করবেন।
(বলে রাখি গল্পটি পুরো পুরি আমার সাজানো চরিত্র এর সাথে বাস্তব জীবনের কোনো মিল নেই ইহা আমার সাজানো কাল্পনিক চরিত্র )